রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ০৯:০৮ অপরাহ্ন

সত্যিকার অর্থে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে ব্যাংকিং খাতের প্রযুক্তিগত পরিবর্তন অত্যাবশ্যক

নিজস্ব প্রতিবেদক, একুশের কন্ঠ : বিশেষজ্ঞরা মনে করেন স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে ব্যাংকিং খাতের প্রযুক্তিগত পরিবর্তন অত্যাবশ্যক। প্রযুক্তিবান্ধব বাংলাদেশি ব্যাংকারদের জন্য ইন্টেলেক্টস থট লিডারশিপের ‘ডিজাইন থিংকিং ফর ডিজিটাল এন্টারপ্রাইজ’ শীর্ষক এক বিশেষ অনুষ্ঠানে বিশেষজ্ঞদের এমন মতামতই উঠে আসে। শীর্ষস্থানীয় আর্থিক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ইন্টেলেক্ট ডিজাইন এরিনা লিমিটেড এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। আলোচনায় বলাহয়, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে ব্যাংকিং খাতের প্রযুক্তিগত পরিবর্তন খুবই জরুরী।

বাংলাদেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় আর্থিক প্রযুক্তি বিষয়ক প্রতিষ্ঠান সোনালী ইন্টেলেক্ট লিমিটেড এবং ইন্টেলেক্টেসের যৌথ উদ্যোগে এটি আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে অনুষ্ঠিত হয়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক দেবদুলাল রায় অনুষ্ঠানে মূল বক্তব্য দেন। আরও উপস্থিত ছিলেন- সোনালী ব্যাংকের উপ ব্যবস্থাপনা পরিচালক সুভাষ চন্দ্র দাস, ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আফজাল করিম, সিআইটিও মোহাম্মদ রেজওয়ান আল বখতিয়ার, রূপালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর, জনতা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল জব্বার, ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মনিরুল মওলা, নগদের প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থপনা পরিচালক তানভীর এ মিশুক, সোনালী ব্যাংকের পরিচালক ও সোনালী ইন্টেলেক্টের স্বাধীন পরিচালক বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অধ্যাপক মোহাম্মদ কায়কোবাদ, ওরাকলের কান্ট্রি ম্যানেজিং ডিরেক্টর রুবাবা দৌলা, ঠাকরল ইনফরমেশন সিস্টেম প্রাইভেট লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বাসব বাগচি, সোনালী ইন্টেলেক্ট লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম জাহাঙ্গীর আক্তার ও ইভিপি ইন্টেলেক্ট ডিজাইন এরিনার রাজু দারিয়ানি। এছাড়া বাংলাদেশের ব্যাংকিং সেক্টরের ৫০টিরও বেশি শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠানের নেতৃবৃন্দ এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন।
অনুষ্ঠানে সোনালী ইন্টেলেক্টের পরিচালক এবং ইন্টেলেক্ট ডিজাইন এরিনার ভারত ও দক্ষিণ এশিয়ার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রামানন এসভির সঞ্চালনায় ‘ব্যাংকস বিকামিং ডিজিটিাল মার্কেটপ্লেস-বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজি’ বিষয়ে দুটি প্যানেলে আলোচনায় অংশ নেন আলোচকরা।

আলোচকরা জানান, ডিজিটাল এন্টারপ্রাইজের রূপান্তর কেবলমাত্র ক্লাউডে স্থানান্তর বা মোবাইল-বান্ধব ইন্টারফেস তৈরি করা ছাড়াও আরও বেশি কিছু বোঝায়। তারা প্রযুক্তির মাধ্যমে ব্যাংকের ডিজিটাল এন্টারপ্রাইজের যাত্রা, সার্বিক বিষয়ের পুনরায় ডিজাইন করাসহ সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।

তাদের মতে, ব্যাংকিং সেক্টরের ব্যবহৃত বিভিন্ন ডিভাইস এবং সেন্ট্রালাইজড প্লাটফর্মের সমস্ত কার্যক্রম সহজ করা সম্ভব। অনুষ্ঠানে জানানো হয়, বাংলাদেশের ব্যাংকিং এবং বীমা শিল্প খাত স্মার্ট বাংলাদেশের ভিশন ২০৪১ অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে এবং ভবিষ্যতমুখী দেশ গড়বে। ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক্সের ২০২৩ সালের জুলাই মাসের রিপোর্টে দেখা যায়, এশিয়া-প্যাসিফিক (এপিএসি) অঞ্চলে এবং সমস্ত ফ্রন্টিয়ার মার্কেটে ১০ বছরে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) চক্রবৃদ্ধিতে বার্ষিক প্রবৃদ্ধির হার (সিএজিআর) ৯.১ শতাংশ। গ্লোবাল সিস্টেম ফর মোবাইল কমিউনিকেশনস অ্যাসোসিয়েশনের (জিএসএমএ) ২০২২ সালের এক প্রতিবেদনে অনুমান করা হয়েছে, ২০২৫ সাল নাগাদ বাংলাদেশের স্মার্টফোনের অনুপ্রবেশ ৬৩ শতাংশে উন্নীত হবে এবং ডিজিটাল ঋণদাতারা আশা করতে পারে যে আগামী বছরগুলোতে টোটাল অ্যাড্রেসেবল মার্কেটে (টিএএম) তাদের সেবা বাড়বে। এই দ্রুত বৃদ্ধির সাথে ব্যাংকিং ও আর্থিক শিল্পের গ্রাহকরা আরও বেশি চাহিদাসম্পন্ন হয়ে উঠবে। এই পরিবর্তনশীল গ্রাহকদের চাহিদা পূরণে ব্যাংকগুলোর যে প্রযুক্তি প্রয়োজন তা কেবলমাত্র একটি ডিজিটাল রূপান্তরের মাধ্যমে করা সম্ভব। এটি ব্যাংকগুলোর জন্য অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার ও অংশীদারিত্বে আরও বেশি বিনিয়োগের সুযোগ তৈরি করবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক দেবদুলাল রায় বলেন, “ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশন বাংলাদেশের ব্যাংকগুলোর জন্য অনেক সুযোগ এনেছে। ডিজিটাল প্রযুক্তির শক্তিকে কাজে লাগানোর মাধ্যমে ব্যাংকগুলো শুধু গ্রাহকদের অভিজ্ঞতাই বাড়ায় না, বিভিন্ন ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনায় দক্ষও করে তোলে। যেখানে স্থানীয় পর্যায়ের লোকজন প্রচলিত ব্যাংকের শাখাগুলোতে যাওয়ার সুযোগ কম পান সেখানে ডিজিটাল প্লাটফর্ম মানুষকে সুবিধাজনকভাবে তাদের আর্থিক লেনদেন পরিচালনা করার এবং এ বিষয়ে অভিজ্ঞ হয়ে উঠার সুযোগ দেয়।”

সোনালী ইন্টেলেক্টের ডিরেক্টর এবং ইন্টেলেক্ট ডিজাইন এরিনার ভারত ও দক্ষিণ এশিয়ার সিইও রামানন এসভি বলেন, শিল্পের ভবিষ্যৎ দ্রষ্টা ও বিশেষজ্ঞদের সম্মিলিত চিন্তা আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ডিজিটাল দিক দিয়ে ক্ষমতায়ন করতে বহু ধারণার জন্ম দিতে পারে। এটি এসব প্রতিষ্ঠানকে ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত করবে। সোনালী ইন্টেলেক্ট গ্রাহকদের জন্য উদ্ভাবনী সমাধান দিয়ে থাকে। আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে দক্ষতার সাথে ডিজিটাল রূপান্তরের ক্ষেত্রে প্রগতিশীল ব্র্যান্ড ইন্টেলেক্টের ওপর নির্ভর করে আসছে। ইন্টেলেক্ট ৫৭টি দেশে ২৭০ টিরও বেশি গ্রাহককে সেবা দিচ্ছে। ব্যাংকিং খাত, সম্পদ ব্যবস্থাপনা, বীমা এবং পুঁজিবাজারসহ বিভিন্ন ভ্যার্টিক্যাল ব্যবসায় ইম্যাক ডট এআই আর্কিটেকচারের মাধ্যমে প্রযুক্তিগত সেবা দিয়ে থাকে। গতিশীল এবং উদ্ভাবনী প্রযুক্তির যুগে গ্রাহকদের অগ্রাধিকার দিয়ে ব্যাংকগুলো পরিচালনা পদ্ধতি পরিবর্তন করবে বলে জানান রামানন এসভি।

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2024  Ekusharkantho.com
Technical Helped by Titans It Solution